রবিবার, ৯ মার্চ, ২০১৪





পাহাড়ের কথা 
মাটির পৃথিবী, ওকে ভালবেসে একলা দাঁড়িয়ে আছি
চুপচাপ শুধু সব দেখে যাই, বিদ্যুৎ মেখে বাঁচি
আমি একা আছি আকাশের নিচে মেঘের চাদর গায়ে,
ঝর্ণার জলে স্নান করি রোজ , সাগরের জল পায়ে।
যুগ যুগ ধরে দেখে যাই শুধু, মুখেতে বেঁধেছি ঠুলি
গুমরে মরছি, বাড়ে তবু রোজ অভিজ্ঞতার ঝুলি।
মনে মনে ভাবি সব কিছু ছেড়ে এবার বেড়িয়ে পড়ি
অজানা বিদেশ অচেনা জগত দেখে আসি তড়িঘড়ি
হলদেটে চাঁদ , তার মুখ থেকে কিছু রং মুছে নিয়ে
সারা গায়ে মেখে ডানা মেলে দিয়ে তারাদের দেশে গিয়ে
বলে আসি এই পৃথিবীর কথা যেগুলো জমেছে বুকে
যুগ যুগ ধরে কুড়িয়ে রেখেছি পাথরের সিন্দুকে
কত হিমবাহ , বরফের যুগ, গ্রাবরেখা -গিরিখাত
কত গিরিঝড়, অঝোর বৃষ্টি , হিমানী সম্প্রপাত,
কতনা জন্ম, কতনা মৃত্যু নীরবে দেখেছি রোজ
মানুষের লেখা কোনও ইতিহাসে মেলে না সে সব খোঁজ
কত ব্যথা আছে এই বুকে লেখা কজন সে সব বোঝে ?
উদাস বাউল মনটা আমার শুধুই শান্তি খোঁজে
অনেক আঘাত নীরবে সয়েছি কখনও বলিনি কিছু
তুষার শুভ্র মাথাটি আমার এখনও তো আছে উঁচু।
আমার বুকের পাঁজর ফাটিয়ে ডিনামাইটের দ্বারা
শান্তির ঘুম , ধৈর্যের বাঁধ , সব ভেঙে দিল কারা ?
গাছপালা কেটে , রাস্তা বানিয়ে ,নদী গতিপথ রুখে
দুপেয়ে মানুষ তোমরা ভাবছ এভাবে থাকবে সুখে ?
যদি ভেবে থাক চিরকাল আমি নীরবে সইব সবই
নীরবে কাঁদব ঠিক যেই ভাবে মাঝরাতে কাঁদে কবি।
ভুলটা বুঝবে যখন আমার সশব্দ প্রতিবাদ
এক লহমায় গুঁড়ো করে দেবে তোমার মাথার ছাদ
আমার জমানো কান্না যখন বজ্রের মত এসে
আছড়ে পড়বে সব অহমিকা মুহূর্তে যাবে ভেসে।
গম্ভীর স্বরে আকাশ ফাটিয়ে বাজাব বিষাণখানা
যুদ্ধে নামব সঙ্গে থাকবে মৃত্যুর পরোয়ানা
তাই বলি শোনও তোমরা আমার শান্তি নিয়ো না কেড়ে
নদীরা চলুক আপন খুশিতে, গাছেরা উঠুক বেড়ে


একলা আমি 
সেই নদীটার কাছে আমি যেই গিয়েছি
সে তো শুধু চুপটি করে শুনল কথা
সেই পাহাড়ের কাছে আমি যেই গিয়েছি
তার তো তখন বুকের ভিতর নিরবতা ।
এই আমিতো এর ও আগে কয়েকশ বার
এদের কাছে এসেছিলাম তোমায় নিয়ে
তখন তাদের সবার কত প্রগলভতা
খিলখিলিয়ে হাসত শুধু সমস্ত দিন।
এখন তুমি যেই গিয়েছ আমায় ছেড়ে
এদের সবার গোমরা মুখে কুলুপ আঁটা।
তোমায় ডেকে দিলাম চিঠি হাওয়ার গায়ে
তোমায় ডেকে দিলাম চিঠি ঘুড়ির বুকে পাখির ডানায়...
সেই পাখিটা উধাও হল, স্তব্ধ হল বাউল বাতাস
সেই ঘুড়িটা গোঁত্তা খেয়ে পড়ল খসে মাঠের পাশে ।
ক্যালেন্ডারের দিনগুলো সব থমকে আছে মুখ বেঁকিয়ে
আকাশ জুড়ে অন্ধকারে একলা আমি... একলা আমি











একলা আমি 
সেই নদীটার কাছে আমি যেই গিয়েছি
সে তো শুধু চুপটি করে শুনল কথা
সেই পাহাড়ের কাছে আমি যেই গিয়েছি
তার তো তখন বুকের ভিতর নিরবতা ।
এই আমিতো এর ও আগে কয়েকশ বার
এদের কাছে এসেছিলাম তোমায় নিয়ে
তখন তাদের সবার কত প্রগলভতা
খিলখিলিয়ে হাসছিল সব দাঁত কেলিয়ে।
এখন তুমি যেই গিয়েছ আমায় ছেড়ে
এখন এরা গোমড়ামুখো একেলষেড়ে
তোমায় ডেকে দিলাম চিঠি হাওয়ার হাতে
 ঘুড়ির বুকে পাখির ডানায়...গভীর রাতে ।
সেই পাখিটা করল হতাশ, স্তব্ধ হল বাউল বাতাস
সেই ঘুড়িটা গোঁত্তা খেয়ে পড়ল ঘাসে মাঠের পাশে ।
মুখ বেঁকান ক্যালেন্ডারের দিনগুলোতে  থমকে থামি
আকাশ জুড়ে অন্ধকারে একলা আমি... একলা আমি…    




















ভুল 
মানুষই তো ভুল করে
আর মাঝে মাঝে ভুল করাও ভাল
ভুল করলে তবেই ঠিক রাস্তা চিনতে পারা যায়।
আবার নতুন করে আগুনে হাত দেবার আগে
অন্তত দুবার ভাবব
অন্তত কিছু প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেব
নতুন রাস্তায় পা ফেলার আগে
অবশ্যই একবার সাবধান হব
যাতে না হোঁচট খাই অজানা পাথরে
যাতে না তলিয়ে যাই চোরাবালি স্রোতে ।

ব্যর্থতা
তোকে তো দিয়েছি আলো ঝিকিমিকি
বাজাতে ছেয়েছি দ্রিমিকি দ্রিমিকি
তুই পারতিস ঠিক পারতিস তুই
আমায় দেখাতে ফসল সবুজ ভুঁই
আমারি তো ছিলি আমারি তো ছিলি
ভোল পাল্টালি রঙ বদলালি
ঘোরালি অনেক অন্ধ গলি ও লেন
হতে পারলিনা সেই বনলতা সেন।   





















বন্ধু
বন্ধু আমি তোমার জন্য
আঁকব অনেক মিষ্টি ছবি
বন্ধু আমি তোমার জন্য
ফেলব লিখে এক পৃথিবী
বন্ধু আমি তোমার জন্য
সাগর সেঁচে মুক্তো খুঁজি 
তোমার জন্য রাত্রি জাগি
বন্ধু আমায় ডাকছ বুঝি ?
টপকে যাব বিশাল পাহাড়
হোক না শক্ত হোক না খাড়াও
সাঁতরে নদী পেরিয়ে যাব
বন্ধু যদি হাতটা বাড়াও ।
জীবন পথে চলতে গিয়ে
হটাৎ যদি ঝড়ও আসে
হাত বাড়িয়ে ডাকলে পরেই
আমায় পাবে তোমার পাশে ।









জলছবি
বেঁচেই আছি    বাঁচছি বেশ
চশমা এঁটে     পক্ক কেশ।
জীবনটা কি?   জানি কি কেউ
মিথ্যে শুধু      গুনছি ঢেউ।
তবুও খুব      বাঁচার আশা
বাড়ছে শুধু    ক্ষুদ পিপাসা ।
কিসের খোঁজে  ইঁদুর দৌড়
ছুটছে লোকে   ছুটছে জোর।
দিনটা আসে    দিনটা যায়
চমকে খসা     ঝরাপাতায়
কলকলানো    নদীর পাশে
চুপটি করে      মৃত্যু আসে।


















স্রষ্টা ও সৃষ্টি
কত কিছুই করলে ঠাকুর
মাটির তলায় রাখলে গো জল
বৃক্ষ শাখায় বসালে পাখি
তাদের দিলে সুমিষ্ট ফল।

ফুল ফোটালে ফুলের গাছে
রাখলে পুরুষ রাখলে নারী
মায়ের কোলে রাখলে শিশু
দুগ্ধ দিলে বক্ষে তারই।

আকাশ জুড়ে আঁকলে তারা
রাখলে নদী গ্রামের পাশে
ফুলের মধ্যে রাখলে মধু
যাতে ভ্রমর চাখতে আসে।

গাঁয়ের পথে গাছ বসালে
রাখলে পুকুর রাখলে মাছও
জীব রাখলে জগত জুড়ে
বললে তাদের- সবাই বাঁচো।

এত কিছু করলে ঠাকুর
মানুষ তবু বুঝল কিছু?
সৃষ্টি তোমার ভেঙে চুরে
তোমার মাথাই করল নিচু।


মায়ের উঠোন
যে কোনও পার্থিব জিনিসের চেয়ে
পবিত্র আমার মায়ের উঠোন।
পৌষ মাসে নতুন বড়ির গন্ধে
ম ম করে চারদিক
ভেসে আসে সুবাতাস।
পাখিরাও নেমে আসে খুদ কুঁড়ো খেতে।
আসে শিশুরা আসে ভিখারির দল।
রাতে আঙিনা আলো করে ফোটে
সাদা বেলি আর চন্দ্র মল্লিকারা।
মুঠো মুঠো শান্তি এসে বাঁধা পরে যায়
নিকনো মাটির উঠোনে।












পৃথিবী ওঠা
আয় পাখি আয় মিহি সুরে গান ধর
শোলোক বলা সে কাজলা দিদিটা কই?
দশ দিগন্ত আলোয় আলোয় ভাসে
চাঁদের আকাশে পৃথিবী উঠেছে ওই!
রুপালি আলোতে দশ দিক ছয়লাপ
কবি শুধু দ্যাখে মায়া চোখ জ্বেলে একা
ভালবাসিবলে ডুকরে কাঁদবে যারা
জনহীন দেশে তাদের তো নেই দ্যাখা।
তবুও কেন যে এত রঙে রেঙে ওঠা
তবুও কেন যে এমন মাতাল রূপ
আকাশে আলোর রোশনাই জ্বলে আছে
চাঁদের দেশটা তবুও তো নিশ্চুপ।
চাঁদ তাই কাঁদে রোজ রাত্তিরে একা
চোখ থেকে তার গড়ায় অশ্রু ফোঁটা
কেউ দেখল না কেউ জানল না ওরে
চাঁদের আকাশে বিশাল পৃথিবী ওঠা।

























তোমরা যে খুব একাই ভিজছ
আমায় সঙ্গে নেবে?
তোমাদের ওই খুশির টুকরো
একটু আমায় দেবে?
আমি বসে আছি খুব একা একা
হাই-ওয়েটার ধারে
আমায় কি নিয়ে যাবে না তোমরা
ছোট্ট নদীর পাড়ে?
একটু পরেই সূর্য ডুববে,
হটাৎ নামবে রাত
একা একা আর থাকতে পারিনা
বাড়াও বন্ধু হাত।
                                                                                               
                          
                 









আহ্বান 
গুমরে মরেছি শুধু মনের গভীরে অস্ফুট আর্তিতে , অপেক্ষায় -অপেক্ষায় বয়ে গেছে রক্তধারা এই যমুনায়।রুধিরের স্রোত জল বৃথা, সব বৃথা অনেক মায়াবী রাত ঝলমলে দিন , নিতান্ত নিস্ফল তারা, অপুষ্পক স্মৃতি।এখনও গোলাপবাগে আধফোটা  কুঁড়ি,  ভ্রমরের স্পর্শ পেতে প্রচণ্ড উন্মুখ।প্রতীক্ষা, প্রতীক্ষা নিয়ে রাত ভোর জেগে, সরিয়ে  রেখেছি পাশে বরমাল্য খানি।তারার জন্মের পর তারার মৃত্যুতে, চুপচাপ কাল স্রোতে বয়ে গেছে কাল।নিঝুম দুপুর থেকে ধূসর বিকেলে অলিন্দে একাকী বসে দেখেছি জগতলুকিয়ে রেখেছি কত চোরাবালি স্রোতলুকিয়ে রেখেছি কত পক্ষ বিধূনন। আগ্নেয়গিরির সেই উদ্গিরণের মত, আজ আমি অভিসারী, রোমাঞ্চ পিয়াসী তুমি এসো...মুগ্ধতার সে প্রাচীন আধিকার নিয়ে এসো রুদ্ধদ্বারে বার বার কর করাঘাত।তোমার উদ্ধত ফনায় আমাকে বিদ্ধ কর, মুগ্ধ কর, কর শিহরিত।বাজিয়ে তোমার বীণ, নিয়ে চল জ্যোৎস্নার মায়াবী জগতে।তোমার ডানার স্বেদ বিন্দু গড়িয়ে পড়ুক আমার ডানায়কানায় কানায় উপচে উঠুক রসস্রোতপিয়াসী  তৃষ্ণার্ত বুকে  ঢেলে দাও অমৃত তোমার






সাঁতার
তুমি যখন পুকুর পাড়ে একা
আমিও আসি বাসন মাজার ছলে
তখন তোমার এপার ওপার সাঁতার
আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে
চল ভেসে যাই অনেক গভীর দেশে
সেই যেখানে ঘুমায় বেবাক লোক
পাতাল পুরীর অচিনপুরে গিয়ে
রাত্রে দেখা স্বপ্ন সত্যি হোক
পুকুর জুড়ে শালুক ফুটে আছে
টুনটুনিটা করছে নাচানাচি
এই সুযোগে সেই সে দেশে গিয়ে
আমরা দুজন স্বপ্ন মেখে বাঁচি
একটু খানি উষ্ণ পরশ মেখে
হাঁসফাসিয়ে গভীর দেশে সাঁতার ...
তল খুঁজো না ,তল পাবে না তুমি
ছোট্ট হলেও যে অকুল পাথার
খুব হয়েছে এবার ভেসে ওঠো
লক্ষ্মী সোনা , যাও চলে যাও বাড়ি
এসব কথা কাউকে যদি বল ,
দুষ্টু ছেলে, তোমার সঙ্গে আড়ি



ফিরে এসো অসুর
অসুর, অসুর, কি তোর কসুর ? মরিস খোঁচা খেয়ে
মিথ্যে তোকে খোঁচায় শুধু হিমালয়ের মেয়ে।
ঘোর কলিতে চারিদিকে চলছে অনাসৃষ্টি
আসছে খরা যখন তখন নামছে অ্যাসিড বৃষ্টি
চারিদিকে এখন শুধু ধিঙ্গি মেয়ের দল
খাচ্ছে বিড়ি মদ গাঁজা সব যাচ্ছে শপিংমল
ঘর ভাঙ্গে সব ইচ্ছে খুশি বর পাল্টায় রোজ
মরল কারা বাঁচল কারা রাখে না তার খোঁজ
আজকে বিয়ে কালকে ডিভোর্স এটাই এখন রীতি
আলট্রা মডার্ন মেয়েরা কেউ রাঙায় না আর সিঁথি
পথে ঘাটে ইচ্ছে করেই দেখায় বুকের শেপ
আয়রে অসুর আয় না ফিরে কর না ওদের রেপ।
           






তুমি  / সুদীপ্ত বিশ্বাস
চাঁদের আলোয় তোমার একি মায়াবী রূপ
অবাক চোখে যতই দেখি ততই ভাবি
তোমার কাছেই লুকানো সব দ্যুলোক ভূলোক
তোমার কাছেই বাঁধা আছে সুখের চাবি।
তোমায় দেখি অবাক চোখে সারাটি রাত
আকাশ ভরা জ্বলজ্বলে তারার দেশে
তোমার রূপে অবাক আমি বিভোর ভাবে
দারুণ সুখে চুপটি করে ঘুমাই শেষে
খুঁজতে তোমায় যাই না আমি দূরে কোথাও
তোমাকে পাই সব সময়ে মনের মাঝে
চারিদিকে তুমিই শুধু নানান রূপে
তোমাকে পাই সারাদিনের হাজার কাজে।
প্রতিদিনের টুকটুকে লাল সূর্য ওঠায়
নদীর জলে ছলাৎ- ছলাৎ সেই চেনা সুর
পাখির ডাকে গানের সুরে শুধুই তুমি
তোমার ছায়ায় এই দুনিয়া মিষ্টি মধুর।



দাওয়াই / সুদীপ্ত বিশ্বাস
বদ হজমে রাম ছাগলের হচ্ছে দারুণ কষ্ট
এত দিনের সাধের ভুঁড়ি সেটাও হল নষ্ট
বেছে বেছে হিসাব করে চলছে খাওয়া দাওয়া
কেউবা বলে এখন রামু বদল কর হাওয়া।
বলল সবাই উপোষ করেই উঠবে রামু সেরে
শেষমেশ তো সুগার প্রেসার দুটোই গেল বেড়ে।
তেত ওষুধ চিবিয়ে খেল, খেল বোতল শিশি
অ্যালোপ্যাথিক হোমিও বা আয়ুর্বেদিক দিশি
সব ওষুধেই ভেজাল এখন, ভেজাল কলি কাল
ভেজাল খেয়ে ভেজাল মেখে রামুর এমন হাল
অবশেষে শিখল রামু  রাম বাবাজীর যোগ
সকাল বিকাল প্রাণায়ামে সারল রামুর রোগ।  









সাঁতার 
তুমি যখন পুকুর পাড়ে একা
আমিও আসি বাসন মাজার ছলে
তখন তোমার এপার ওপার সাঁতার
আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে
'চল ভেসে যাই অনেক গভীর দেশে
সেই যেখানে ঘুমায় বেবাক লোক
পাতাল পুরীর অচিনপুরে গিয়ে
রাত্রে দেখা স্বপ্ন সত্যি হোক '
পুকুর জুড়ে শালুক ফুটে আছে
টুনটুনিটা করছে নাচানাচি
এই সুযোগে সেই সে দেশে গিয়ে
আমরা দুজন স্বপ্ন মেখে বাঁচি
একটু খানি উষ্ণ পরশ মেখে
হাঁসফাসিয়ে গভীর দেশে সাঁতার
'তল খুঁজো না তল পাবে না তুমি
ছোট্ট হলেও যে অকুল পাথার
খুব হয়েছে এবার ভেসে ওঠো
লক্ষ্মী সোনা , যাও চলে যাও বাড়ি
এসব কথা কাউকে যদি বল ,
দুষ্টু ছেলে, তোমার সঙ্গে আড়ি '
















সার্থকতা 
            
এটা ভাল নয়
এটা সুন্দর নয়, এটা চমৎকার
চমৎকার এই নতুনের মাঝে পুরানোর পথ চলা
সৃষ্টির এই রাজ্যে
এই যে আলোক বর্তিকা নিয়ে আমরা ছুটছি,
এই যে গেয়ে চলেছি জীবনের জয়গান
শুধু সেই জন্য
ধন্য, আমি ধন্য।
আমি যে সামিল হতে পেরেছি সুন্দরের স্রোতে
আমি যে মিশে যেতে পেরেছি সৃষ্টির সুরের মূর্ছনায়
চাওয়া নাই
এর চেয়ে আর বেশি কিছু
চাওয়া নাই।









সুর 
ধ্বংসের পরেই এক বীজমন্ত্র বাজে
অঝোর বর্ষণ শেষে ঝলমলে দিন
মায়াবী পৃথিবী এক গান গেয়ে চলে
সুন্দর তোমার কাছে একবুক ঋণ ।
সেই গানে সেই সুরে দশদিক ভাসে
গভীর আকাশ থেকে অসীম পাতালে
যেখানেই কান পাতি শুনি সেই সুর
সুন্দর তোমার সুরে আমায় মাতালে
আমি যেই মৃত্যু দেখি, দেখি নবজন্ম
খসখসে ঝরা পাতা শোনায় নূপুর
কচিপাতা মাথা নাড়ে এ গাছে ও গাছে
মাটির পৃথিবী জুড়ে সুর সুধু সুর।
গোলাপি সূর্যের পাশে টুনটুনি জাগে
ফুরফুর উড়ে যায় ডাল থেকে ডালে
আমি আসি আমি যাই আমি বেঁচে থাকি
সুর সুধু সুর শুনি আকাশে পাতালে।


রাত্রি
চাঁদের আলো নূপুর বাজায় তারার আলো নাচে
গোপন কথার ঢেউগুলো ওই রাতের বুকে বাঁচে ।
মুণ্ডু কাটা ধরগুলো সব জীবন ফিরে পায়
আয়রে রাত্রি শুনশান তুই আমার পাশে আয়।  
রাত্রিরে তোর মোম ঝরানো গোপন কথা শুনি
তোর সাথে রোজ রাত জেগে তাই হাজার তারা গুনি।
রাত্রিরে তুই চল না নিয়ে অন্ধকারের পারে
তোর সাথে যাই অচিন দেশে আলোর ধারে ধারে।
রাত্রিরে তুই রোজই দেখাস নীহারিকার দেশ
অন্ধকারের আলোয় ঢাকা রূপের তো নেই শেষ।
জীবন পারে আলোর ধারে যাদের বসবাস
রাত্রিরে তুই রোজ এসে সেই খবর দিয়ে যাস।
দিন তো ফাঁকা আলোয় আঁকা গভীর কিছু নয়
পঞ্চভূতের হিসাব লেখা রাত্রি মায়াময়।


কবিতা
সেটা আকাশ থেকে হটাৎ ভেসে আসে
সেটা স্বপ্ন হয়ে নামে আমার পাশে
তার আলোর সুরে শুকতারাটি হাসে
তার খুশির দোলা প্রতিটি ঘাসে ঘাসে।
তার সুরের ধারা আপনি বয়ে চলে
তার গভীর সুরে প্রাণটি কথা বলে।
তাকে মনন করে মনের সীমা বুঝি
তার গভীরতায় পাতালপুরী খুঁজি।
তাকে অস্ত্র করে দূর বিদেশে যাই
সেই তারার পারে মরণ সীমানায়।
তাকে আগলে বুকে জীবনে বেঁচে থাকি
তাকে যত্ন করে আবেগ দিয়ে আকি।
তার প্রাণের সুরে বাঁধা আমার প্রাণ
তার গানের সুরে সুর যে পেল গান।
তার উথলে ওঠা আবেগটুকু নিয়ে
ওই ঝর্না ছোটে পাহাড় চিরে দিয়ে।
তার শক্তি কত বলতে পারে কেউ?
সে তো রোজই বলে সাগর সেঁচা ঢেউ।
তাকে আগলে রাখি মাথায় করে চলি
তার সপ্ত সুরে প্রাণের কথা বলি।
তার চলার পথে আবেগ রাশি রাশি
তাকে আদর করি, তাকেই ভালবাসি।



ধৈবতী  আলো  ... সুদীপ্ত বিশ্বাস

আলো,   ও ধৈবতী  আলো 
তুমি      সবার চেয়ে ভাল  
তুমি      প্রদীপেই ঘুমাবে ?   
তবে      প্রদীপ নিভে যাবে
তখন    নামবে  অন্ধকার
নদীর     এই পাড় ওই পাড়
দুটিই     সমান অন্ধকার।
যখন     জমবে সঙ্গম
দেখব    কার যে কত দম
যদি      পাখি ঝাপটায় ডানা
তবে      উড়তে তো নেই মানা
চলো      মেঘে উড়ে যাই
চাল ডাল  সেদ্ধ করে খাই
যখন      হাঁস ফাঁসাবে প্রাণ
করব      অমৃত জল পান
যদি        রাতের পাখি ডাকে
তবে       সঙ্গে নেব তাকে
আলো,   ওগো  কোমল  আলো
তুমি       সত্যি দারুণ ভাল
তুমি       তারার দেশে থাক
রাতে       মিষ্টি করে আঁক  
হলুদ      জ্যোৎস্না মাখা চাঁদ
পাশে      মেঘকে ধরার ফাঁদ
তুমি       কত কিছুই জানো
তুমি       জীবনে সুর আনো
তুমি       কবিকে দাও গান
তুমি       সবাই কে দাও প্রাণ
তুমি       খেয়াল খুশি জ্বলো 
তুমি        মিষ্টি কথা বল
তুমি       প্রেমিক ছেলের হাসি
তুমি       রাধার মোহনবাঁশি
তুমি      গাঁয়ের বধূর রঙ
তুমি       জানো অনেক ঢঙ
আলো,   ওগো  গান্ধার আলো
তুমি       খুশির প্রদীপ জ্বালো।
তুমি       দূর আকাশে থাকো
তুমি       সব্বাইকে ডাকো
তুমি       ঝিকমিকিয়ে জ্বলো
তুমি       ফিসফিসিয়ে বল
অনেক    জটিল জটিল কথা
তুমি        ভাঙ্গাও নিরবতা।
তুমি        সাহস যোগাও খুব
যখন       আঁধারে দিই ডুব
তুমি       যেই মিলিয়ে যাও
চোখে      আদর বুলিয়ে দাও 
যখন       অনেক অনেক বকে
ঘুমায়       ঘুমিয়ে যায় লোকে
আমি       তখন তোমায় ভাবি
তোমার    কাছেই আছে চাবি
সেই সে    যক্ষপুরীর দ্বার

খোলার     একলা অধিকার ... 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কাঁটাতার

কাঁটাতার  / সুদীপ্ত বিশ্বাস  আমরা পাখিরা উড়ে যাই কতদূরে কত দেশ-গ্রাম ইয়ত্তা নেই তার মানুষেরা শুধু ঝগড়া-বিবাদ করে মানুষের শুধু দেশভাগ কাঁটাতা...